মনির হোসেন জীবন, গাজীপুর: গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বাড়ইপাড়া এলাকার হেসং বিডি লিমিটেড কারখানায় ফের শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
আজ শনিবার সকালে কারখানার শ্রমিকরা কাজে
যোগদান না করে কারখানার মূল ফটকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। কারখানা ফটকে
বিপুল পরিমান পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
জানাযায়, কিছুদিন আগেও শ্রমিক ছাটাইকে
কেন্দ্র করে বেশ কয়েকবার শ্রমিক অসন্তোষের সৃষ্টি হয় কারখানাটিতে।
একপর্যায়ে কারখানাটি বন্ধ হয়ে যায়। পরে মালিকপক্ষ ও শ্রমিকদের সাথে সমঝোতার
মাধ্যমে পুনরায় তা চালু হয়। এরই মধ্যে আজ শনিবার আবারও শ্রমিক অসন্তোষ
দেখা দিয়েছে।
কারখানার শ্রমিক সূত্রে জানা যায়, গত
বৃহস্পতিবার শ্রমিকরা কাজে যোগদান করে। পরে দুপুরের খাবার জন্য শ্রমিকরা
বাহিরে বের হওয়ার সময় কারখাানর সিকিউরিটি ইনচার্জ মো. নজরুল ইসলাম নজরুল এর
কাছে শ্রমিকরা কারখানার অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন কারখানায় কোন ধরণের
সমস্যা নেই। সব ঠিক আছে।
সিকিউরিটি ইনচার্জের কথার ভিত্তিতে
শ্রমিকরা বাসায় ফিরে যায়। এরই মধ্যে বিকেলে শ্রমিকরা জানতে পারে কারখানায়
ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে করে শ্রমিকদের মনে প্রশ্ন জাগে সব ঠিক থাকার পরও
কারখানায় ভাংচুরের ঘটনা ঘটলো কিভাবে।
এরই মধ্যে কারখানার জিএম (এডমিন ও সিএসআর)
দুলাল সাহা প্রচার করছে যে শ্রমিকরা কারখানা ভাংচুর করে চলে গেছে। এবং এরই
দাবি ধরে শ্রমিকদের ছাটাঁই করতে আর কোন বাধা থাকবে না।
পরের দিন সাপ্তাহিক বন্ধ থাকার পর আজ
শনিবার কারখানার মূল ফটকে শ্রমিকরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। পরে শিল্প
পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে এবং ভিতরে ঢুকে ভাংচুরের প্রমান পায়।
কারখানাটির তিনতলার পিসি কমিটির
চেয়ারম্যান মো. মোস্তাক জানান, কারখানার স্টাফরাই ভাংচুর করে তার দায়ভার
শ্রমিকদের উপরে চাপিয়ে দিচ্ছে। যাতে করে শ্রমিকদের ছাটাঁই করার পথ সুগম হয়।
এছাড়া কারখানার বেশিরভাগ শ্রমিকের ধারণা
যে, কারখানা কর্তৃপক্ষের লোকজন কারখানার ভিতর ভাংচুর চালিয়ে শ্রমিকদের
বিরুদ্ধে তা চাপিয়ে দিয়ে স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করছে। শ্রমিকদের যাতে সকল
সুবিধা থেকে বাদ দেওয়া যায় তারই সুকৌশল এটি।
এদিকে এমন ঘটনায় কারখানার কর্মকর্তাদের
ব্যবহার রহস্যজনক হয়ে ওঠে। কারখানার ভিতরে কোন সাংবাদিকদের প্রবেশ এমনকি
সাংবাদিকদের সাথে কোন ধরণের কথা বলা হবে না বলে কারখানার মূল ফটক থেকে
জানিয়ে দেয়া হয়।
পরে এ ব্যাপারে কারখানার জিএম (এডমিন ও
সিএসআর) দুলাল সাহার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, কারখানার মালিকপক্ষ
এমন কাজ কখনো করতে পারে না। শ্রমিকরাই কারখানা ভাংচুর করে কারখানার
স্টাফদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। সাংবাদিকদের কারখানার ভিতরে ঢুকতে না
দেয়া ও কোন ধরণের তথ্য না দেয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
এছাড়া কারখানার ভিতর সিসি ক্যামেরার ভিডিও
ফুটেজের কথা বললে তিনি বলেন, যা দেখানোর দরকার তা পুলিশকে দেখানো হবে।
সাংবাদিকদের দেখানোর কোন দরকার নেই বলে ফোন কেটে দেন।
শিল্প পুলিশ-২ এর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা
(ওসি) মো. শহিদুল্লাহ ওই কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষের বিষয়টি নিশ্চিত করে
বলেন, শনিবার সকালে শ্রমিকরা কারখানার মূল গেইটের সামনে অকারনে শ্রমিক
ছাটাই বন্ধের এবং শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে বিক্ষোভ ও
কর্মবিরতি পালন করে। পরে দুপুরের দিকে তাদের বকেয়া বেতন পরিশোধের
প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলে তারা শান্ত হয়ে ঘরে ফিরে যায়।
No comments:
Post a Comment